প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে নিরাপত্তা ত্রুটি: হ্যাকিংয়ের শঙ্কায় সতর্কবার্তা পাঠালেন শুভাকাঙ্ক্ষী
প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে গুরুতর নিরাপত্তা ত্রুটি: শুভাকাঙ্ক্ষীর সতর্কবার্তা প্রকাশিত
আজ প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণের হোম পেজে একটি জরুরি সতর্কবার্তা প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে এক শুভাকাঙ্ক্ষী প্রথম আলোর ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা সংক্রান্ত একটি গুরুতর ত্রুটি সম্পর্কে অবগত করেছেন। তিনি জানান, প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে ব্যবহৃত কুইনটাইপ টেকনলজিস ইন্ডিয়া লিমিটেডের তৈরি কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিএমএস)-এ এমন একটি ত্রুটি রয়েছে, যা অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে যে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সংবাদের তথ্য পরিবর্তন বা মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করতে সক্ষম হতে পারে।
শুভাকাঙ্ক্ষীর মতে, এই ত্রুটির কারণে প্রথম আলোর প্রকাশিত সংবাদের নির্ভরযোগ্যতা ক্ষুণ্ন হতে পারে, যার ফলে প্রতিষ্ঠানটির প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট হতে পারে। এছাড়াও, যেকোনো অসাধু ব্যক্তি এই ত্রুটির সুযোগ নিয়ে পূর্বপ্রকাশিত সংবাদকে সম্পাদনা করতে পারে, অথবা নতুন মিথ্যা তথ্য সংবাদ হিসেবে প্রকাশ করে তা বিভ্রান্তি ও গুজব ছড়াতে পারে। প্রথম আলো, যা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বিশ্বস্ত সংবাদমাধ্যম হিসেবে বিবেচিত, এমন ঝুঁকির সম্মুখীন হওয়াটা উদ্বেগজনক।
শুভাকাঙ্ক্ষীর সতর্কবার্তা
শুভাকাঙ্ক্ষী তার বার্তায় স্পষ্ট করে উল্লেখ করেন, তিনি কোনোভাবেই প্রথম আলোর শত্রু নন বা তাদের কোনো ক্ষতি করতে চান না। বরং তিনি প্রথম আলোর একটি শুভানুধ্যায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ত্রুটি সম্পর্কে সতর্ক করতে এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। তার দাবি, এই নিরাপত্তা ত্রুটির বিষয়ে তিনি প্রথম আলো কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে চান, যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে এটি সমাধান করা যায়।
শুভাকাঙ্ক্ষী আরও বলেন, তিনি প্রথম আলোর প্রযুক্তি বিভাগের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে প্রস্তুত আছেন এবং তিনি এই ত্রুটি সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য তাদের সামনে তুলে ধরতে চান। তার সাথে যোগাযোগের জন্য তিনি একটি ইমেইল ঠিকানা ([email protected]) প্রদান করেছেন, যেখানে প্রথম আলোর নির্বাহী কর্মকর্তারা তার সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করতে পারেন। তিনি আশাবাদী যে প্রথম আলো কর্তৃপক্ষ তার এই বার্তাকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করবে এবং দ্রুত এই নিরাপত্তা ত্রুটি সমাধান করবে।
” প্রথম আলোর জন্য জরুরি সতর্কতা
প্রিয় মতিউর রহমান স্যার এবং প্রথম আলোর কর্মীবৃন্দ,
আমি প্রথমেই এই বিষয় পরিষ্কার করতে চাই যে আমি আপনাদের শত্রু নই বা দেশের সর্বাধিক পঠিত ও সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য বাংলা সংবাদপত্র প্রথম আলোর কোনো সম্পদের ক্ষতি করার কোনো উদ্দেশ্য আমার নেই।
কিন্তু অনলাইন মাধ্যমে সংবাদ প্রচারের জন্য আপনাদের ওয়েবসাইটের ব্যবহৃত কুইনটাইপ টেকনলজিকস ইন্ডিয়া লিমিটেডের তৈরি কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিএমএস)-এ গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা ত্রুটি রয়েছে।
যা ব্যবহার করে অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান প্রথম আলোর পূর্বপ্রকাশিত কোন সংবাদ বা তথ্য পরিবর্তন, পরিমার্জন বা নতুন কোন মিথ্যা তথ্য সংবাদ আকারে প্রকাশ করে প্রথম আলোর বিশ্বাসযোগ্যতা ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের মধ্যে গুজব ছড়াতে পারে।
তাই আপনাদের সতর্ক করতে আমি এ বার্তাটি প্রকাশ করছি। আপনাদের প্রযুক্তি বিভাগ ও নির্বাহী কর্মকর্তাদের সামনে আমি সকল নিরাপত্তা ত্রুটি সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরতে ইচ্ছুক এবং যুক্ত প্রচেষ্ঠায় দ্রুত সময়ের মধ্যে তা সংশোধন করতে আগ্রহী। আমার সাথে যোগাযোগের জন্য prothomalosecurityconcern@ duck dot com এই ঠিকানায় ই-মেইল করার অনুরোধ করা হলো।
ইতি
প্রথম আলোর একজন শুভাকাঙ্ক্ষী “
প্রথম আলোর প্রতিক্রিয়া ও পদক্ষেপ
প্রথম আলোর পক্ষ থেকে এই সতর্কবার্তা সম্পর্কে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে, এটি স্পষ্ট যে একটি বৃহৎ সংবাদমাধ্যম হিসেবে প্রথম আলোর ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে যেকোনো নিরাপত্তা ত্রুটি বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে, বিশেষ করে যখন সেটি এমন একটি প্রতিষ্ঠান যার ওপর লাখ লাখ পাঠক প্রতিদিন নির্ভর করেন।
এই ধরনের নিরাপত্তা ত্রুটি অবিলম্বে সমাধান না করা হলে এর সম্ভাব্য পরিণতি হতে পারে বিভ্রান্তি ছড়ানো, মিথ্যা তথ্য প্রচার, এবং এমনকি সামাজিক অস্থিরতা তৈরি করা। বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম হিসেবে প্রথম আলোর মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এটি অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার বিষয় যে তাদের ওয়েবসাইট এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতামত
এ বিষয়ে সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যেকোনো বড় অনলাইন প্ল্যাটফর্মের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। বর্তমান বিশ্বে অনলাইন মাধ্যমে সংবাদ প্রচার এবং তথ্য ভাগাভাগি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক। যখন একটি বৃহত্তর পাঠকশ্রেণী একটি সংবাদমাধ্যমের উপর নির্ভরশীল হয়, তখন সেই মাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্যতা রক্ষা করা অপরিহার্য। নিরাপত্তা ত্রুটির কারণে যদি মিথ্যা বা ভুয়া সংবাদ ছড়ানো সম্ভব হয়, তবে সেটি শুধু একটি সংবাদমাধ্যমের ক্ষতি নয়, বরং তা সামাজিক অস্থিরতা তৈরি করতেও সক্ষম।
এখন প্রশ্ন উঠছে, প্রথম আলো কত দ্রুত এবং কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম হবে। অনেক বিশেষজ্ঞই মনে করেন, এ ধরনের নিরাপত্তা ত্রুটি সমাধানে একটি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব প্রযুক্তি দলের সক্ষমতা থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অপরদিকে, অনেক সংবাদমাধ্যম আউটসোর্সড কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের উপর নির্ভরশীল থাকে, যা কখনো কখনো প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব নিয়ন্ত্রণের বাইরে থেকে যায়। এ কারণেই প্রতিটি সংবাদমাধ্যমের উচিত নিজস্ব সাইবার নিরাপত্তা দল তৈরি করা এবং নিয়মিত তাদের সিস্টেমগুলোর নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করা।