|

৪৩তম থেকে ৪৭তম বিসিএসের মাধ্যমে ১৮ হাজার ১৪৯ জন নিয়োগ পাবে

৪৩তম থেকে ৪৭তম পাঁচটি বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে ১৮ হাজার ১৪৯ জন নিয়োগ পাবে বাংলাদেশে

বাংলাদেশ সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ঘোষণা দিয়েছে যে, ৪৩তম, ৪৪তম, ৪৫তম, ৪৬তম এবং ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে মোট ১৮ হাজার ১৪৯ জনকে বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। এর মধ্যে ক্যাডার পদে ১২ হাজার ৭১০ জন এবং নন-ক্যাডার পদে ৫ হাজার ৪৩৯ জনের নিয়োগ চূড়ান্ত হয়েছে। রোববার (২৪ নভেম্বর) সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান এই তথ্য জানান। এই ব্যাপক নিয়োগ প্রক্রিয়া দেশের প্রশাসন কাঠামোকে আরও সুসংহত এবং গতিশীল করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বিসিএস ৪৩তম: নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে

৪৩তম বিসিএসের মাধ্যমে ২ হাজার ৭০৬ জন প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হবে। এর মধ্যে ২ হাজার ৬৪ জন ক্যাডার এবং ৬৪২ জন নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ পাবেন। এই বিসিএসের গেজেট প্রকাশিত হয়েছে এবং নিয়োগপ্রাপ্তদের আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে, এই নিয়োগ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে আলোচনা ও সমালোচনা দেখা দেওয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে গোয়েন্দা সংস্থা—এনএসআই ও ডিজিএফআই’র মাধ্যমে প্রার্থীদের অতিরিক্ত যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া চালু আছে।

বিসিএস ৪৪তম: নতুন করে মৌখিক পরীক্ষা

৪৪তম বিসিএসে মোট ৩ হাজার ৫০১ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে, যার মধ্যে ১ হাজার ৭১০ জন ক্যাডার এবং ১ হাজার ৭৯১ জন নন-ক্যাডার পদে যোগ দেবেন। এই বিসিএসে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১১ হাজার ৭৩২ জন প্রার্থীর মধ্যে ৩ হাজার ৯৩০ জনের মৌখিক পরীক্ষা ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, স্বচ্ছতা বজায় রাখার স্বার্থে এবং নতুন কমিশন গঠনের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আগের মৌখিক পরীক্ষা বাতিল করে নতুন করে সকল ১১ হাজার ৭৩২ জন প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হবে।

বিসিএস ৪৫তম: পুনর্মূল্যায়ন কার্যক্রম

৪৫তম বিসিএসে ক্যাডার পদে ২ হাজার ৩০৯ জন এবং নন-ক্যাডার পদে ১ হাজার ৫৭০ জনসহ মোট ৩ হাজার ৮৭৯ জন নিয়োগ পাবেন। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ১২ হাজার ৭৮৯ জন উত্তীর্ণ হওয়ার পর তাদের লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্র পুনর্মূল্যায়নের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় পরীক্ষকের মূল্যায়ন শেষ হলেও, নতুন কমিশন গঠনের পরে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে তৃতীয় পরীক্ষকের মাধ্যমে নতুন করে পুনর্মূল্যায়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

বিসিএস ৪৬তম: নতুন ফলাফল ঘোষণা

৪৬তম বিসিএস পরীক্ষায় প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ১০ হাজার ৬৩৮ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হন। লিখিত পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত এই সংখ্যার পাশাপাশি আরও ১০ হাজার ৬৩৮ জন প্রার্থীকে যুক্ত করে মোট ২১ হাজার ২৭৬ জনকে লিখিত পরীক্ষার জন্য বিবেচনা করা হয়েছে। সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে সম্ভাব্য বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে এবং সকল প্রার্থী যাতে সমান সুযোগ পান, তা নিশ্চিত করতে।

বিসিএস ৪৭তম: সর্বোচ্চ নিয়োগ ঘোষণা

৪৭তম বিসিএসে ক্যাডার পদে ৩ হাজার ৪৮৭ জন এবং নন-ক্যাডার পদে ৩২৫ জনসহ মোট ৩ হাজার ৮১২ জনকে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে সরকারি কর্ম কমিশনে (পিএসসি) নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির জন্য আবেদন পাঠিয়েছে।

মোট নিয়োগ ২০ হাজার ছাড়াবে

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ৪৩তম থেকে ৪৭তম বিসিএসের মাধ্যমে মোট ১৮ হাজার ১৪৯ জনের পাশাপাশি আরও ২ হাজার কর্মকর্তার নিয়োগ হবে। এই অতিরিক্ত নিয়োগ নন-ক্যাডার পদের মাধ্যমে বা নতুন বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে হতে পারে। সবমিলিয়ে ২০ হাজারের বেশি কর্মকর্তা নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন, যা বাংলাদেশ সরকারের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

এই ব্যাপক নিয়োগ প্রক্রিয়া বাংলাদেশ প্রশাসনের দক্ষতা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। সরকার প্রতিটি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। নতুন কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ কার্যক্রম আরও শক্তিশালী হবে এবং জনসেবা খাতে গুণগত মান বৃদ্ধি পাবে। ৪৩তম থেকে ৪৭তম বিসিএসের এই নিয়োগ কার্যক্রম দেশের প্রশাসনিক কাঠামোকে আরও সুসংগঠিত করবে।

Similar Posts