শনিবার থেকে মেট্রোরেল পুনরায় চলাচল শুরু করতে যাচ্ছে
আগামী শনিবার থেকে মেট্রোরেল যাত্রী নিয়ে পুনরায় চলাচল শুরু করবে
আগামী শনিবার থেকে ঢাকায় মেট্রোরেল যাত্রী নিয়ে চলাচল শুরু করতে যাচ্ছে। এ বিষয়ে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পেয়েছে। বর্তমানে মেট্রোরেল ব্যবস্থার বিভিন্ন দিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ট্রেন পরিচালনার প্রস্তুতি, এবং যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ।
ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক জানিয়েছেন, যাত্রী নিয়ে মেট্রোরেল চালু হতে সর্বোচ্চ সাত দিন সময় লাগতে পারে, তবে এর আগেও চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, “নিরাপত্তা বিষয়ক কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরেই মেট্রোরেল চালু হবে, যাতে যাত্রীরা নিরাপদে এবং স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমণ করতে পারেন।”
সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়্যে সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রোববার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সচিবদের বৈঠকে দ্রুত মেট্রোরেল চালুর নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ বৈঠকে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী বিষয়টি উত্থাপন করলে প্রধান উপদেষ্টা শনিবার থেকেই মেট্রোরেল চালু করার নির্দেশ দেন। এই সিদ্ধান্তটি গ্রহণের ফলে ঢাকার জনসাধারণের প্রতীক্ষার অবসান ঘটতে যাচ্ছে। বিশেষকরে মহিলা এবং যারা মতিঝিল যাতায়াত করেন তাদের জন্য অনেক উপকারী এই সেবা।
ডিএমটিসিএল সূত্রে আরও জানা গেছে, মেট্রোরেল চালুর প্রস্তুতি পুরোদমে শুরু হয়েছে। আজ মেট্রোরেলের সম্পূর্ণ পথ পরিদর্শন করা হয়েছে এবং আজ সোমবার নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয়গুলো পরীক্ষা করা হবে। এতে স্টেশনগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ট্রেনের কার্যকারিতা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা হবে। মঙ্গলবার থেকে যাত্রীবিহীন (ব্ল্যাঙ্ক) ট্রেন চালানো হতে পারে এবং কয়েকদিন পর যাত্রী নিয়ে মেট্রোরেল চলাচল শুরু হবে। যাত্রী নিয়ে চলাচলের আগে মেট্রোরেল পুলিশের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হবে, যাতে যাত্রীদের কোনো ধরনের অসুবিধা না হয়।
তবে মেট্রোরেল চালু হলেও মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে ট্রেন থামবে না, কারণ আন্দোলনের সময় এই দুটি স্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত বাকি ১৪টি স্টেশনে যাত্রী ওঠা-নামা করতে পারবেন। ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
গত ১৮ জুলাই মিরপুর–১০ গোলচত্বরে পুলিশের একটি বক্সে অগ্নিসংযোগের পর মেট্রোরেলের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরদিন মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে, যা মেট্রোরেল পরিচালনায় সাময়িক বিঘ্ন ঘটায়। তবে মেট্রোরেলের লাইন, কোচ, সংকেত এবং কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সব অক্ষত রয়েছে, তাই মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশন বাদ দিয়ে অন্য স্টেশনগুলোতে মেট্রোরেল চালাতে কোনো বাধা নেই। এই ঘটনার পর মেট্রোরেল ব্যবস্থার নিরাপত্তা আরও জোরদার করার পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের পরিস্থিতি এড়ানো যায়।
এটি ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থায় একটি নতুন অধ্যায় হিসেবে যুক্ত হচ্ছে, যা শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও সহজ এবং দ্রুততর করবে। মেট্রোরেল চালু হলে যাত্রীদের যাতায়াতের সময় ও খরচ উভয়ই কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সংবাদ এর সোর্স দেখতে এখানে ক্লিক করুন