|

বিসিএসে একবার প্রিলিমিনারি পরীক্ষা পাস করলে আর দেওয়া লাগবে না

পিএসসির বিসিএসে বারবার প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দেওয়ার প্রয়োজন বন্ধের প্রস্তাব


৪৭তম বিসিএস পরীক্ষা ঘিরে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) বেশ কিছু নতুন উদ্যোগ নিয়েছে, যা পরীক্ষার প্রক্রিয়াকে আরও আধুনিক ও কার্যকর করতে সহায়ক হবে। প্রিলিমিনারি পরীক্ষার পুনরাবৃত্তি বন্ধ এবং পরীক্ষার্থীদের জন্য ইউনিক আইডি সিস্টেম চালুর প্রস্তাব এ উদ্যোগগুলোর অন্যতম। প্রস্তাবিত এই সিস্টেম পরীক্ষার্থীদের সময় ও শ্রম সাশ্রয়ের পাশাপাশি প্রশাসনিক জটিলতা কমাবে। নতুন নিয়ম কার্যকর হলে, প্রিলিমিনারি উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের ভবিষ্যতে এই ধাপটি আবারও পেরোতে হবে না। পিএসসির এই পদক্ষেপগুলো পরীক্ষার স্বচ্ছতা বাড়ানোর পাশাপাশি পদ্ধতিগত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

পিএসসির পরিকল্পিত নতুন ইউনিক আইডি সিস্টেম পরীক্ষার্থীদের জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই ব্যবস্থায়, একবার ইউনিক আইডি পাওয়ার পর, পরীক্ষার্থীরা ভবিষ্যতের বিসিএস পরীক্ষাগুলোতে বারবার আবেদন না করেই অংশ নিতে পারবেন। প্রিলিমিনারি ধাপ একবার সফলভাবে পেরোলেই, তাঁরা সরাসরি লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন, যা সময় ও প্রক্রিয়া সহজ করবে।

বিসিএস এক্সাম ও নিয়োগ সংবাদ
বিসিএস এক্সাম ও নিয়োগ সংবাদ

ইউনিক আইডি: একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ

পিএসসি এবার পরীক্ষার্থীদের জন্য ইউনিক আইডি সিস্টেম চালুর পরিকল্পনা করেছে। মোবাশ্বের মোনেম বলেন, “৪৭তম বিসিএস থেকে পরীক্ষার্থীদের একটি ইউনিক আইডি প্রদান করা হবে। এই আইডি দিয়ে তারা ভবিষ্যতের সব বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। বারবার আবেদন করার প্রয়োজন হবে না।”


তিনি উল্লেখ করেন যে, এই ব্যবস্থা চালু করতে সরকারের নীতিমালা তৈরি করা আবশ্যক। তবে এটি দীর্ঘমেয়াদে পরীক্ষার্থীদের জন্য উপকারী হবে এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম আরও সহজ করে তুলবে।

প্রিলিমিনারি পরীক্ষার পুনরাবৃত্তি বন্ধের উদ্যোগ

বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, একজন পরীক্ষার্থী প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও ভবিষ্যতের বিসিএসে আবারও প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দিতে হয়। পিএসসি চেয়ারম্যান এ প্রসঙ্গে বলেন, “প্রস্তাবিত ইউনিক আইডি সিস্টেমের অধীনে, প্রিলিমিনারি ধাপ একবার সফলভাবে পেরোলে, পরীক্ষার্থীদের পুনরায় প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। তাঁরা সরাসরি লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। তবে এটি বাস্তবায়নে কিছু বিধিমালা পরিবর্তনের প্রয়োজন হবে।”

৪৭তম বিসিএসের গুরুত্বপূর্ণ তারিখ ও পদের সংখ্যা

৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার অনলাইন আবেদন শুরু হবে আগামী ২৯ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় এবং চলবে ৩০ জানুয়ারি রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত। এই বিসিএসে মোট ৩,৬৮৮টি পদে নিয়োগ দেওয়া হবে, যার মধ্যে ক্যাডার পদের সংখ্যা ৩,৪৮৭ এবং নন-ক্যাডার পদের সংখ্যা ২০১।

ক্যাডার পদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হলো:

  • প্রশাসন ক্যাডার: ২০০ জন
  • পুলিশ ক্যাডার: ১০০ জন
  • স্বাস্থ্য ক্যাডার: ১,৩৬১ জন (সহকারী সার্জন ১,৩৩১ জন, সহকারী ডেন্টাল সার্জন ৩০ জন)
  • কৃষি ক্যাডার: ১৬৮ জন
  • কারিগরি ও পেশাগত ক্যাডার: ১,৮৮৩ জন

বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে প্রভাষক পদ রয়েছে ৯৬৫টি:

  • সাধারণ কলেজগুলোর জন্য ৯২৯টি পদ
  • সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার জন্য ২৭টি পদ
  • পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের ইনস্ট্রাক্টর পদ ১২টি

নন-ক্যাডার পদের মধ্যে নবম গ্রেডের ৪১টি, দশম গ্রেডের ১৫৪টি এবং দ্বাদশ গ্রেডের ৬টি পদ রয়েছে।

বয়সের সীমা

৪৭তম বিসিএসে আবেদন করার জন্য প্রার্থীর বয়স ২০২৪ সালের ১ নভেম্বর অনুযায়ী ২১ থেকে ৩২ বছরের মধ্যে হতে হবে। এই সীমার বাইরে থাকা কোনো আবেদনপত্র গ্রহণযোগ্য হবে না।

পিএসসির নতুন এই উদ্যোগগুলো বিসিএস পরীক্ষার প্রক্রিয়াকে আরও সহজ ও দক্ষ করে তুলবে। বিশেষ করে ইউনিক আইডি এবং প্রিলিমিনারি ধাপ অতিক্রম করা পরীক্ষার্থীদের পুনরায় একই পরীক্ষা না দেওয়ার প্রস্তাব পরীক্ষার্থীদের জন্য সময় ও শ্রম সাশ্রয় করবে।

এছাড়াও, এই পরিবর্তনগুলোর ফলে পিএসসি ও পরীক্ষার্থীদের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সুসংহত হবে। তবে উদ্যোগগুলো সফল করতে সংশ্লিষ্ট বিধিমালার দ্রুত সংস্কার ও বাস্তবায়ন জরুরি।

৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার নতুন বৈশিষ্ট্যগুলো ভবিষ্যতের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা পদ্ধতিকে আরও আধুনিক ও কার্যকর করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এখন শুধু বাস্তবায়নের অপেক্ষা।

Similar Posts