রমজান ২০২৪ সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি ও ক্যালেন্ডার: বাংলাদেশ
মাহে রমজান ২০২৪, হিজরি ১৪৪৫, সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি: বাংলাদেশ রমজান মাসের ক্যালেন্ডার ২০২৪
রমজান মাস মুসলিম উম্মাহর জন্য আধ্যাত্মিক পুনর্জাগরণ, সংযম ও আত্ম-নিয়ন্ত্রণের এক অনন্য সময়। ২০২৪ সালের রমজান, হিজরি ১৪৪৫ অনুযায়ী, বাংলাদেশের মুসলিম সমাজ এই পবিত্র মাসটি উদযাপনের জন্য তৈরি হচ্ছে। এই মাসের মূল অংশ হলো সূর্যোদয়ের আগে সেহরি খাওয়া এবং সূর্যাস্তে ইফতার করে রোজা ভাঙা। এই সময়সূচি মেনে চলা শুধু শারীরিক ব্যায়ামই নয়, বরং আত্মার শুদ্ধি ও আল্লাহর সাথে নিজের সম্পর্ক দৃঢ় করার এক অনন্য উপায়।
সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি ২০২৪
বাংলাদেশে ২০২৪ সালের রমজানের সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি স্থান ভেদে ভিন্ন হবে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, এবং রংপুর সহ প্রধান শহরগুলোতে সেহরি ও ইফতারের সময় আলাদা হবে। বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতি বছরের মতো এই বছরও নির্ভুল সময়সূচি প্রকাশ করে থাকে, যেন বিশ্বাসীরা সঠিক সময়ে সেহরি এবং ইফতার করতে পারে। এই সময়সূচি অনুসরণ করে মুসলিমরা তাদের দৈনন্দিন জীবন ও ইবাদতের সময়সূচি সাজাতে পারে।
রমজান মাস মুসলিম উম্মাহর জন্য এক পবিত্র সময়, যেখানে দিনের বেলা রোজা রাখা হয়। এই সময়ে, সেহরি এবং ইফতারের সময় জানা অত্যন্ত জরুরি। উল্লেখিত তালিকা অনুযায়ী, সেহরির সময় ১২ মার্চ থেকে শুরু করে ০৪:৫১ মিনিটে এবং ধীরে ধীরে প্রতিদিন প্রায় এক মিনিট করে কমে ১০ এপ্রিল ০৪:২০ মিনিটে নেমে আসে। অন্যদিকে, ইফতারের সময় প্রায় স্থির থাকে, ০৬:১০ থেকে শুরু করে ০৬:২২ মিনিটে শেষ হয়। এই সময়সূচী রোজাদারদের সঠিক সময়ে সেহরি এবং ইফতার করার জন্য গাইড করবে।
রমজানের ক্যালেন্ডার ২০২৪
রমজান | তারিখ | বার | সেহরির শেষ সময় | ইফতারের সময় |
---|---|---|---|---|
১ | ১২ মার্চ | মঙ্গলবার | ০৪:৫১ | ০৬:১০ |
২ | ১৩ মার্চ | বুধবার | ০৪:৫০ | ০৬:১০ |
৩ | ১৪ মার্চ | বৃহস্পতিবার | ০৪:৪৯ | ০৬:১১ |
৪ | ১৫ মার্চ | শুক্রবার | ০৪:৪৮ | ০৬:১১ |
৫ | ১৬ মার্চ | শনিবার | ০৪:৪৭ | ০৬:১২ |
৬ | ১৭ মার্চ | রবিবার | ০৪:৪৬ | ০৬:১২ |
৭ | ১৮ মার্চ | সোমবার | ০৪:৪৫ | ০৬:১২ |
৮ | ১৯ মার্চ | মঙ্গলবার | ০৪:৪৪ | ০৬:১৩ |
৯ | ২০ মার্চ | বুধবার | ০৪:৪৩ | ০৬:১৩ |
১০ | ২১ মার্চ | বৃহস্পতিবার | ০৪:৪২ | ০৬:১৩ |
১১ | ২২ মার্চ | শুক্রবার | ০৪:৪১ | ০৬:১৪ |
১২ | ২৩ মার্চ | শনিবার | ০৪:৪০ | ০৬:১৪ |
১৩ | ২৪ মার্চ | রবিবার | ০৪:৩৯ | ০৬:১৪ |
১৪ | ২৫ মার্চ | সোমবার | ০৪:৩৮ | ০৬:১৫ |
১৫ | ২৬ মার্চ | মঙ্গলবার | ০৪:৩৬ | ০৬:১৫ |
১৬ | ২৭ মার্চ | বুধবার | ০৪:৩৫ | ০৬:১৬ |
১৭ | ২৮ মার্চ | বৃহস্পতিবার | ০৪:৩৪ | ০৬:১৬ |
১৮ | ২৯ মার্চ | শুক্রবার | ০৪:৩৩ | ০৬:১৭ |
১৯ | ৩০ মার্চ | শনিবার | ০৪:৩১ | ০৬:১৭ |
২০ | ৩১ মার্চ | রবিবার | ০৪:৩০ | ০৬:১৮ |
২১ | ০১ এপ্রিল | সোমবার | ০৪:২৯ | ০৬:১৮ |
২২ | ০২ এপ্রিল | মঙ্গলবার | ০৪:২৮ | ০৬:১৯ |
২৩ | ০৩ এপ্রিল | বুধবার | ০৪:২৭ | ০৬:১৯ |
২৪ | ০৪ এপ্রিল | বৃহস্পতিবার | ০৪:২৬ | ০৬:১৯ |
২৫ | ০৫ এপ্রিল | শুক্রবার | ০৪:২৪ | ০৬:২০ |
২৬ | ০৬ এপ্রিল | শনিবার | ০৪:২৪ | ০৬:২০ |
২৭ | ০৭ এপ্রিল | রবিবার | ০৪:২৩ | ০৬:২১ |
২৮ | ০৮ এপ্রিল | সোমবার | ০৪:২২ | ০৬:২১ |
২৯ | ০৯ এপ্রিল | মঙ্গলবার | ০৪:২১ | ০৬:২১ |
৩০ | ১০ এপ্রিল | বুধবার | ০৪:২০ | ০৬:২২ |
Download Ramadan Calendar 2024 Bangla
রমজানের গুরুত্ব
রমজানের গুরুত্ব শুধুমাত্র উপবাস পালনেই সীমাবদ্ধ নয়; এটি আত্ম-শুদ্ধি, আল্লাহর প্রতি গভীর ভক্তি, এবং মানবতার প্রতি দানশীলতার মাস। এই মাসে, মুসলিমরা অধিক পরিমাণে নামাজ আদায় করে, কোরআন পাঠ করে, এবং দান-সদকা দিয়ে সমাজের দুঃস্থ মানুষের প্রতি তাদের সমর্থন প্রকাশ করে। এই মাসে রাতের বিশেষ নামাজ, তারাবীহ নামাজের মাধ্যমে আধ্যাত্মিক বিকাশের এক অনন্য সুযোগ পায়।
ইসলাম ধর্মে, রমজান মাস অত্যন্ত পবিত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়, যা মুসলিম উম্মাহর জন্য আত্ম-শুদ্ধি, আত্ম-নিয়ন্ত্রণ, আধ্যাত্মিক বিকাশ, এবং মানবতার প্রতি দয়া ও সহানুভূতি প্রকাশের এক অনন্য সুযোগ। রমজান মাসের গুরুত্ব ইসলামের বিভিন্ন দিক থেকে প্রকাশ পায়, যা নিম্নলিখিতভাবে বর্ণিত হতে পারে:
১. কোরআন নাজিল:
রমজান হল সেই মাস যে মাসে কোরআন, মুসলিম উম্মাহর পবিত্র গ্রন্থ, প্রথম নাজিল হয়েছিল। এই কারণে, রমজান মাসে কোরআন পাঠ এবং তার উপর চিন্তা-ভাবনা করা অত্যন্ত উৎসাহিত করা হয়।
২. রোজা:
রমজান মাসে রোজা রাখা ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের একটি। এই সময়ে, ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খাওয়া, পান করা, এবং শারীরিক সম্পর্ক থেকে বিরত থাকতে হয়। রোজার মাধ্যমে মুসলিমরা আত্ম-নিয়ন্ত্রণ শিখে এবং তাদের ইচ্ছাশক্তি বৃদ্ধি করে।
৩. দান-সদকা এবং জাকাত:
রমজান মাসে দান এবং সদকা দেওয়া অত্যন্ত উৎসাহিত করা হয়। এই সময়ে জাকাত, যা ধনী মুসলিমদের তাদের সম্পদের একটি নির্দিষ্ট অংশ গরিব ও দুঃস্থদের মধ্যে বিতরণের জন্য বাধ্যতামূলক, তা প্রদান করা হয়।
৪. তারাবীহ নামাজ:
রমজান মাসে রাতে বিশেষ নামাজ, তারাবীহ নামাজ আদায় করা হয়। এই নামাজের মাধ্যমে মুসলিমরা আধ্যাত্মিক বিকাশ এবং আল্লাহর সাথে তাদের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করে।
৫. লাইলাতুল কদর:
রমজানের শেষ দশ দিনের মধ্যে এক রাতে লাইলাতুল কদর অবস্থিত, যা হাজার মাসের চেয়েও বেশি বরকতময় বলে বিবেচিত। এই রাতে ইবাদত করা অসংখ্য পুণ্যের সমান।
৬. আত্ম-পরিশুদ্ধি ও মানবতার প্রতি সহমর্মিতা:
রমজান মাস মুসলিমদের জন্য নিজেদের আত্মা পরিশুদ্ধ করার এবং গরিব, দুঃস্থ এবং অসহায়দের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশের এক অনন্য সুযোগ। এটি মুসলিমদের মধ্যে একতা এবং ভ্রাতৃত্ববোধ বৃদ্ধি করে।
রমজান মাসের এই গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি ইসলামের মূল শিক্ষাকে প্রতিফলিত করে এবং মুসলিম উম্মাহকে আরও ভালো, সহমর্মিতা ও আধ্যাত্মিকভাবে সচেতন সমাজ গড়ে তুলতে উৎসাহিত করে।
সামাজিক দায়বদ্ধতা ও দানশীলতা
রমজান মাস সমাজের মধ্যে একতা এবং সহায়তার বন্ধন আরও দৃঢ় করে। ইফতার পার্টি, খাদ্য বিতরণ, এবং অন্যান্য চ্যারিটেবল কর্মকান্ড এই মাসে বিশেষ গুরুত্ব পায়। সমাজের সকল স্তরের মানুষ একসাথে মিলিত হয়ে এই পবিত্র মাসটি উদযাপন করে, যা সামাজিক সম্প্রীতি ও ঐক্যের এক অনন্য উদাহরণ তৈরি করে।
স্বাস্থ্য ও পুষ্টি
রমজানে উপবাস করার সময়, সঠিক পুষ্টি ও হাইড্রেশনের গুরুত্ব অপরিসীম। সেহরি ও ইফতারে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা উচিত, যাতে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বজায় থাকে। পানি এবং তরল খাবারের পরিমাণ বাড়িয়ে দেহের জলশূন্যতা প্রতিরোধ করা উচিত।
শেষ কথা
২০২৪ সালের মাহে রমজান হিজরি ১৪৪৫ বাংলাদেশের মুসলিম সমাজের জন্য আধ্যাত্মিক বিকাশ, সামাজিক দায়বদ্ধতা, এবং আত্ম-নিয়ন্ত্রণের এক অনন্য সুযোগ হিসেবে গণ্য হবে। এই পবিত্র মাসে সঠিক সেহরি ও ইফতারের সময় মেনে চলে, আমরা সবাই মিলে একটি আরও সমৃদ্ধ এবং সুস্থ সমাজ গড়ে তুলতে পারি। রমজানের এই পবিত্র মাসটি আমাদের সকলের জীবনে শান্তি, সুখ, এবং সমৃদ্ধি নিয়ে আসুক, এই প্রার্থনা করি।